অ্যাসেম্বলি ভাষা (Assembly Language)
অ্যাসেম্বলি ভাষা হচ্ছে মেশিন ভাষার পরবর্তী প্রোগ্রামের ভাষা। মেশিন ভাষার সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য পঞ্চাশের দশকে অ্যাসেম্বলি ভাষার প্রচলন শুরু হয়। এই ভাষা দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহার করা হতো যা মেশিনের ভাষা থেকে উন্নত, সংক্ষিপ্ত এবং ব্যবহারকারীর জন্য সহজবোধ্য। আসেম্বলি ভাষাকে মেশিনের ভাষায় রূপান্তরিত করার জন্য অ্যাসেম্বলার নামক এক ধরনের ট্রান্সলেটর বা অনুবাদক প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। অ্যাসেম্বলি ভাষা বিভিন্ন সংকেত সমন্বয়ে লেখা হয়ে থাকে। এজন্য অ্যাসেম্বলি ভাষাকে সাংকেতিক ভাষাও বলা হয়। কারণ অ্যাসেম্বলি ভাষার ক্ষেত্রে নির্দেশ ও ডাটার অ্যাড্রেস বাইনারি বা হেক্স সংখ্যার সাহায্যে না দিয়ে বিভিন্ন সংকেতের সাহায্যে দেয়া হয়। এই সংকেতকে বলে সাংকেতিক কোড বা নেমোনিক, যার সাহায্যে কোনো বড় সংখ্যা বা কথাকে মনে রাখার সুবিধা হয়। যেমন: অ্যাকিউমুলেটরে লোড করা বা রাখার নেমোনিক হচ্ছে LDA (এলডিএ)।
অ্যাসেম্বলি ভাষার পুরো নির্দের্শে সাধারণত চারটি অংশ থাকে। যথা:
১। লেবেল: লেবেলের মধ্যে নির্দেশের সাংকেতিক অ্যাড্রেস থাকে।
২। অপ-কোড বা অপারেশন কোড: অপারেশন কোডে ইনস্ট্রাকশন বা কমান্ডের নেমোনিক থাকে।
৩। অপারেন্ড: এখানে সাধারণত আলফানিউমেরিক বর্ণের দ্বারা অপারেন্ডের অবস্থানের অ্যাড্রেস বোঝানো হয়।
৪। মন্তব্য: মন্তব্য ব্যবহৃত হয় প্রোগ্রামের নিজের সুবিধার জন্য। মন্তব্য মেশিনের ভাষায় অনুদিত হয় না। মন্তব্য হলো প্রত্যেক নির্দেশের ব্যাখ্যা যাতে ভবিষ্যতে প্রোগ্রামার বা অন্য কেউ প্রোগ্রামের সঠিক অর্থ সহজে বুঝতে পারে।
অ্যাসেম্বলি ভাষার সুবিধা:
১। মেশিনের ভাষার মতো দক্ষ ও সংক্ষিপ্ত প্রোগ্রাম রচনা সম্ভব।
২। প্রোগ্রাম রচনায় মেমোরি অ্যাড্রেসের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ প্রয়োজন হয় না।
৩। মেশেনের ভাষার তুলনায় এ ভাষার প্রোগ্রাম রচনা তুলনামূলক সহজ।
৪। মেশিনের ভাষার তুলনায় ডিবাগিং সহজতর।
অ্যাসেম্বলি ভাষার অসুবিধা:
১। এই ভাষায় প্রোগ্রাম লিখতে হলে মেশিনের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
২। এ ভাষার প্রোগ্রাম মেশিনের সংগঠনের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ এক ধরনের কম্পিউটারে লিখিত প্রোগ্রাম অন্য ধরনের কম্পিউটারে নাও চলতে পারে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions