বৃষ্টির দিন নিয়ে কিছু কথা
২১ জুলাই ২০১৮
প্রচ- গর্জনে ঘুম ভেঙে গেল। জানালা খুলে দেখি সকাল হয়ে গেছে। কিন্তু এই সকাল অন্য দিনের মতো নয়। প্রবল বর্ষণের সঙ্গে চলছে বজ্রপাত। কিছুক্ষণ পর বজ্রপাত কমে গেল বটে কিন্তু বৃষ্টির আর বিরাম নেই। দুচোখে যেন আবারও রাজ্যের ঘুম নেমে এলো। কতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম জানি না, যখন বিছানা ছেড়ে উঠলাম ঘন কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে আছে, আর সেই সঙ্গে চলছে অবিরল বৃষ্টি। গরম এক কাপ চা নিয়ে জানালার পাশে বসলাম। গাছপালা ভিজছে, গাছের ডালে ভিজে চুপসে কাক বসে আছে এক ঠাঁয়। বাইরে যেতে না পেরে বাড়ির কুকুরটা মন মরা হয়ে বসে আছে। বারান্দায় হাঁস-মুরগিগুলো জড়ো হয়েছে। আমাকে একটুও ভয় পাচ্ছে না ওরা। আমার মতোই ওরাও বৃষ্টির দাপট দেখছে। মনে পড়লো বর্ষা ও বৃষ্টি নিয়ে রবীন্দ্রনাথ অসাধারণ কবিতা ও গান রচনা করেছেন। মেঘলা দিনে কৃষ্ণকলি নামের কালো মেয়ের কালো চোখকে দেখেছিলেন কবি। কালিদাসের মেঘদূত তো সর্বকালের বিরহীর মনোবেদনাকেই প্রকাশ করেছে। হঠাৎ শুনলাম কাছেই কোথাও রেকর্ডে বাজছে - ‘এমন দিনে তারে বলা যায় এমন ঘনঘোর বরিষায়’ গানটি। এতক্ষণ আমি বর্ষার একটি দিকই কেবল দেখছিলাম। নতুন আরেকটি দিক দেখলাম একটু পরেই। পত্রিকা বিক্রি করে পেট চালায় যে কিশোর ছেলেটি সে খুব দ্রুত চলে গেল ভিজতে ভিজতে। পত্রিকা বিক্রি করতে না পারলে আজ হয়ত ওকে না খেয়েই থাকতে হবে। সামনের গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিক্সাগুলো যাত্রীর জন্য ব্যাকুল। কিন্তু খুব প্রয়োজন ছাড়া এই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কে আর বাইরে বেরোবে? ভাবছিলাম সুখি মানুষের জন্য বৃষ্টি বিলাসিতার সুযোগ করে দিলেও গরিব খেটে খাওয়া মানুষের কাছে বর্ষা কখনোই রোমান্টিক কিছু না।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions