সারমর্ম লেখার নিয়ম
কোনো গদ্য বা কবিতা রচনায় যেসব যুক্তি, দৃষ্টান্ত, উপমা ও অলঙ্কার থাকে তা বাদ দিয়ে সহজ ও সরল ভাষায় বিষয়টি সংক্ষেপে প্রকাশ করার নামই সারাংশ বা সারমর্ম।
সারাংশ বা সারমর্ম লেখার নিয়ম সমূহ:
১. নির্ধারিত অংশটি বার বার পড়ে মূল বক্তব্য অনুধাবন করতে হবে।
২. মূল অংশে যেসব অপ্রয়োজনীয় উপমা, অলঙ্কার, দৃষ্টান্ত আছে সারাংশে তা বাদ দিয়ে আসল কথাটা লিখতে হবে।
৩. একই কথার পুনরাবৃত্তি করা যাবে না। তেমনি প্রয়োজনীয় অংশ বাদ দেয়া যাবে না।
৪. সারাংশ খুব ছোট কিংবা বড় হবে না। মূল অংশের চেয়ে তা অবশ্যই আকারে ছোট হবে।
৫. বক্তব্যের বর্ণনায় বিশেষণ, ক্রিয়াপদ, অলঙ্কার, উপমা, রূপক ইত্যাদি অবান্তর। বাহুল্য বাদ দিয়ে মূল বিষয়টি সরাসরি লিখতে হবে।
৬. মূল বিষয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো বিষয় সারাংশে অবতারণা করা যাবে না। অনুমান নির্ভর কোনো ব্যাখ্যা বাঞ্ছনীয় নয়।
৭. সারমর্ম কিংবা সারাংশ রচনার ভাষা মূলের অনুগামী হওয়া প্রয়োজন। সহজ-সরল মৌলিক ভাষায় বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যাতে সবার সহজবোধ্য হয়।
৮. উদ্ধৃত রচনায় একাধিক বিষয় থাকলে তা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে এবং মূল বিষয়টি থেকে যাতে রচিত অংশটি সরে না আসে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।
৯. শব্দ ও বাক্য প্রয়োগে সংযম অবলম্বন করতে হবে। একাধিক বিশেষণ প্রয়োগ বাঞ্ছনীয় নয়।
১০. কোনো সাংকেতিক বিষয় থাকলে তার তত্ত্ব বের করতে হবে। ব্যক্তি বা বস্তু সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য থাকলে দুই পক্ষের বক্তব্য আলাদাভাবে প্রকাশ করতে হবে।
১১. প্রদত্ত অনুচ্ছেদ অথবা কবিতাংশটি বারবার পড়ে মূলভাবটি বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
১২. উদ্ধৃত অংশের মূলভাবের বাক্য/বাক্যগুলি চিহ্নিত করুন।
১৩. উপমা, উদাহরণ, উদ্ধৃতি ও রূপক আলাদাভাবে চিহ্নিত করুন।
১৪. সারাংশ লিখনের সময় লেখার আয়তনের দিকে লক্ষ্য রাখুন।
১৫. মূলভাবটি যথাযথ ও সহজ বাক্যবিন্যাসে লিখুন।
১৬. উপমা, রূপক উদ্ধৃতসহ সকল বাহুল্য বর্জন করুন।
১৭. একই কথার পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে লক্ষ্য করুন।
১৮. উদ্ধৃতাংশটি কোন্ কবি বা লেখকের সেটি বলার দরকার নেই।
১৯. প্রথম বাক্যটি হবে সহজ সরল ও মূলভাবের প্রতি নির্দেশক।
২০. সারাংশটি লেখা হলে কয়েকবার পড়ে নিশ্চিত হন যে প্রয়োজনীয় কোনো কিছু বাদ যায়নি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions