Home » » জ্ঞাতি সম্পর্ক কি

জ্ঞাতি সম্পর্ক কি

জ্ঞাতি সম্পর্ক কি

সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষ সমাজে বসবাসের ক্ষেত্রে নানা জটিল সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। বেঁচে থাকার তাগিদে সমাজের মানুষকে কারো না কারো সংস্পর্শে থাকতে হয়। আর এ ধরনের সম্পর্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হলো জ্ঞাতিসম্পর্ক। 


জ্ঞাতিসম্পর্কের অর্থ: 

ইংরেজি Kin শব্দের অর্থ জ্ঞাতি আর Kinship শব্দের অর্থ জ্ঞাতিসম্পর্ক। সাধারণত একজন মানুষ যখন রক্ত বা বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হয়ে কোনো সম্পর্ক গড়ে তুলে তখন তাকে জ্ঞাতিসম্পর্ক বলে। তবে ব্যাপক অর্থে জ্ঞাতিসম্পর্ক বলতে রক্ত, বিবাহ, বন্ধুত্ব, কাল্পনিক, দত্তক ইত্যাদি সূত্রে আবদ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে সম্পর্ককে নির্দেশ করতে বোঝানো হয়। সামাজিক নৃবিজ্ঞানীরা মনে করেন জ্ঞাতিসম্পর্ক হলো সমাজে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফল। 


জ্ঞাতিসম্পর্কের প্রকার : 

সাধারণত দু প্রকারের জ্ঞাতিসম্পর্ক হয়ে থাকে। যথা- বিবাহভিত্তিক জ্ঞাতিসম্পর্ক (Affinal Kinship)এবং সগোত্ৰসূচক জ্ঞাতিসম্পর্ক (Consanguineal Kinship)। বৈবাহিক বন্ধনের সূত্র ধরে যে ধরনের জ্ঞাতিসম্পর্ক সৃষ্টি হয় তাকে বিবাহভিত্তিক জ্ঞাতিসম্পর্ক বলে। কোনো নারী পুরুষের মধ্যে বিবাহের ফলে শুধু বিবাহিত ঐ নারী পুরুষের মধ্যেই সম্পর্ক তৈরি হয় না বরং নারী এবং পুরুষের দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও সম্পর্ক তৈরি হয়। এক্ষেত্রে শ্যালক, শ্যালিকা, দুলাভাই, ভাবী, দেবর, ভাসুর, ননদ, শ্বশুর, শাশুড়ি ইত্যাদি সম্পর্ক দুই পক্ষ থেকেই সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, রক্তের বন্ধনের ভিত্তিতে নিজের গোষ্ঠীর মধ্যে যেসব সম্পর্ক গড়ে উঠে তাকে সগোত্ৰসূচক জ্ঞাতিসম্পর্ক বলে। এক্ষেত্রে চাচা, ছেলে, ভাই, জেঠা, ফুফু, চাচাতো ভাই, চাচাতো বোন, ফুফাতো ভাই, ফুপাতো বোন ইত্যাদি সম্পর্ক। আরো এক ধরনের জ্ঞাতিসম্পর্ক আছে, যাকে সামাজিক জ্ঞাতিসম্পর্ক (Social Kinship) বলে। বিবাহিত কোনো সন্তানহীন দম্পতি যদি অন্যের কোনো সন্তানকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে রক্তের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এক ধরনের সগোত্ৰসূচক জ্ঞাতিসম্পর্ক তৈরি হয় যাকে বলা সামাজিক জ্ঞাতিসম্পর্ক। 

এছাড়াও জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্কের নৈকট্য বা দূরত্বের ভিত্তিতে জ্ঞাতিসম্পর্ককে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা- মূখ্য জ্ঞাতি (Primary Kin) এবং গৌণ জ্ঞাতি (Secondary Kin)। মূখ্য জ্ঞাতি হলো স্বামী-স্ত্রী, বাবা- ছেলে, মা- মেয়ে, বাবামেয়ে, মা- ছেলে এবং ভাই- বোন। অন্যদিকে গৌণ জ্ঞাতি হলো চাচা/জেঠা-ভাতিজা/ভাতিজি, শ্যালক/শ্যালিকা-দুলাভাই, ননদ/দেবর-ভাবী ইত্যাদি।


জ্ঞাতিসম্পর্কসূচক রীতিনীতি 

ক) নিষিদ্ধ জ্ঞাতিসম্পর্ক রীতিনীতি : আমাদের সমাজে কোনো কোনো জ্ঞাতি সম্পর্কে কিছু কিছু বিধি নিষেধ পালন করতে হয়। যেমন-ছেলের বউয়ের সাথে শ্বশুর অথবা মেয়ের স্বামীর সাথে শাশুড়ি, ভাই-বোন এর মধ্যে যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এদের কারো কারো সাথে দেখা সাক্ষাতও নিষিদ্ধ। যেমন ছেলের বউ-চাচা/মামা শ্বশুর, মেয়ের স্বামী-চাচী/মামী শাশুড়ি। এরূপ সম্পর্ককে নিষিদ্ধসূচক জ্ঞাতিসম্পর্ক হিসেবে অভিহিত করা হয়।

খ) হাসি-তামাসার জ্ঞাতিসম্পর্ক রীতিনীতি: এ ধরনের জ্ঞাতিসম্পর্কে সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে হাসি তামাসা-কৌতুক, চিমটি কাটা ইত্যাদি চলে বিধায় এটি নিষিদ্ধ জ্ঞাতিসম্পর্কের সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী জ্ঞাতিসম্পর্ক। যেমন- দেবর-ভাবী, শ্যালিকা-দুলাভাই ইত্যাদি এরূপ সম্পর্কের উদাহরণ। 

গ) পরোক্ষ জ্ঞাতিসম্পর্কসূচক রীতিনীতি : এরূপ জ্ঞাতিসম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি কারো সাথে প্রত্যক্ষভাবে কোনো জ্ঞাতিভিত্তিক সম্পর্ক গড়ে না তুলে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করে বিধায় একে পরোক্ষ জ্ঞাতিসম্পর্কচক রীতিনীতি বলা হয়। উপমহাদেশের সমাজে পরিবারগুলোতে নারীরা তাদের স্বামীরা নাম সরাসরি মুখে না এনে সন্তানের নামের সাথে মিলিয়ে সম্বোধন করে। এক্ষেত্রে পরিবারের বড় সন্তানের নামই বেশি ব্যবহৃত হয়। যেমন- অমুকের বাবা, তমুকের বাবা ইত্যাদি। 

ঘ) মাতুলপ্রভাবসূচক রীতিনীতি : আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায় মায়ের ভাইয়ের/মামার সাথে ছেলেমেয়েদের/ভাগিনাভাগিনির সুদৃঢ় সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে মামার অবদান ভাগিনা-ভাগিনি জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। কখনো কখনো এ প্রভাব পিতার থেকেও বেশি হয়। 

ঙ) ফুফুর সাথে বিশেষ সম্পর্কসূচক রীতিনীতি : কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাবার বোন তার ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের প্রতি অনেক যত্নশীল হওয়ার কারণে এ ধরনের সম্পর্কের রীতিনীতির সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের জীবনে ফুফুর অবদানকে স্বীকৃত দেওয়া হয়। 

সামাজিক নৃবিজ্ঞানীগণ সমাজের জ্ঞাতিসম্পর্ক বিশ্লেষণে গুরুত্ব দিয়েছেন। কেননা জ্ঞাতিসম্পর্কের শিথিলতা সমাজে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। তবে শিল্পায়িত আধুনিক শিক্ষিত সমাজে এর প্রভাব আগের তুলনায় অনেক কম। আধুনিক সমাজে যৌথ পরিবার ব্যবস্থা ভেঙ্গে নগর ভিত্তিক অণু পরিবার ব্যবস্থা গড়ে উঠার ফলে এখন জ্ঞাতি আবেদন মানুষের মাঝে কম। এছাড়াও নব্যবাস বিবাহ প্রথার কারণে এমনটি বেশি হচ্ছে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *