Home » » কিভাবে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করবেন?

কিভাবে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করবেন?

ইন্টারনেট ব্রাউজ করার গতি বৃদ্ধি করা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যেহেতু ইন্টারনেট এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ, দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ব্রাউজ করতে না পারলে আমাদের কাজকর্ম অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর কৌশল জানা থাকলে আপনি সহজেই সময় বাঁচাতে পারেন এবং আরো বেশি উৎপাদনশীল হতে পারবেন। এই নিবন্ধে, আমরা আপনাকে দেখাবো কীভাবে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারেন।

ইন্টারনেট ব্রাউজিং কেন দ্রুত হওয়া প্রয়োজন?

আমরা প্রতিদিন অনেক কাজের জন্য ইন্টারনেটের উপর নির্ভর করি। কাজের মধ্যে ইমেল পাঠানো, ভিডিও কল করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো, কিংবা অনলাইনে শপিং করা- সবই ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ধীরগতির ইন্টারনেট ব্রাউজিং আপনার কাজকে ধীরগতিতে নিয়ে যেতে পারে এবং আপনার সময় নষ্ট করতে পারে। তাই দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।

  • কাজের গতি বৃদ্ধি: দ্রুত ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের ফলে আপনি কম সময়ে বেশি কাজ করতে পারবেন।
  • ভালো ইউজার এক্সপিরিয়েন্স: ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে ওয়েবসাইট লোড হতে দেরি হলে আপনার অভিজ্ঞতা নষ্ট হতে পারে।
  • ডাটা সেভিং: দ্রুত পেজ লোড হলে কম ডাটা ব্যবহার হয়, ফলে আপনি ডাটা সাশ্রয় করতে পারবেন।
  • কাজের কার্যকারিতা বৃদ্ধি: দ্রুতগতির ইন্টারনেট আপনার কাজের দক্ষতাকে বাড়িয়ে দেবে এবং আপনার সময় বাঁচাবে।

এখন চলুন জেনে নেই কীভাবে আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের গতি বৃদ্ধি করতে পারেন।

১. আপনার ইন্টারনেট কানেকশন আপগ্রেড করুন

ভালো ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার নির্বাচন

দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে একটি ভালো ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার নির্বাচন করতে হবে। অনেক সময় ইন্টারনেটের গতি কম থাকার প্রধান কারণই হতে পারে নিম্নমানের ইন্টারনেট কানেকশন। আপনাকে ইন্টারনেটের প্ল্যান নির্বাচনের সময় অবশ্যই স্পিড ও ব্যান্ডউইথ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

  • ব্যান্ডউইথ: উচ্চ ব্যান্ডউইথ ইন্টারনেট ব্যবহার করলে আপনি সহজেই দ্রুত ব্রাউজ করতে পারবেন।
  • প্ল্যান আপগ্রেড: যদি আপনার ইন্টারনেট প্ল্যানের স্পিড কম থাকে, তবে স্পিড আপগ্রেডের জন্য ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে যোগাযোগ করুন।
  • ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট: ফাইবার অপটিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার ব্রাউজিং স্পিড উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

ইন্টারনেট প্যাকেজ রিভিউ করা

আপনার ইন্টারনেট প্যাকেজ রিভিউ করে দেখুন সেটি আপনার প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা। যদি আপনি ভারী ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হন (উচ্চ মানের ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং ইত্যাদি), তাহলে একটি দ্রুতগতির প্যাকেজ নির্বাচন করা উচিত।

২. ইন্টারনেট ব্রাউজারের পারফরম্যান্স উন্নত করুন

ব্রাউজার আপডেট করা

আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজার যদি পুরনো ভার্সন হয়, তবে এটি ধীরগতিতে কাজ করতে পারে। ব্রাউজারের নতুন ভার্সনগুলি সাধারণত পুরনো সমস্যাগুলো সমাধান করে, এবং দ্রুতগতিতে কাজ করতে সক্ষম হয়।

  • গুগল ক্রোম: নিয়মিত ক্রোম আপডেট করলে এর পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পাবে।
  • মোজিলা ফায়ারফক্স: ফায়ারফক্স আপডেট করেও আপনি দ্রুতগতিতে ব্রাউজ করতে পারবেন।

অপ্রয়োজনীয় এক্সটেনশন এবং প্লাগইন রিমুভ করুন

আপনার ব্রাউজারে অনেক সময় এমন কিছু এক্সটেনশন এবং প্লাগইন থাকে যেগুলো আপনি কখনও ব্যবহার করেন না। এগুলোর কারণে ব্রাউজার ধীরগতিতে কাজ করতে পারে। তাই অপ্রয়োজনীয় এক্সটেনশন এবং প্লাগইনগুলো রিমুভ করুন।

  • এক্সটেনশন রিভিউ: ব্রাউজারের এক্সটেনশনগুলো পর্যালোচনা করে অপ্রয়োজনীয় গুলো আনইনস্টল করুন।
  • ক্যাশ এবং কুকিজ ক্লিয়ার করা: সময়ে সময়ে ব্রাউজারের ক্যাশ এবং কুকিজ ক্লিয়ার করলে ব্রাউজিং স্পিড বেড়ে যায়।

৩. DNS সার্ভার পরিবর্তন করা

DNS সার্ভার কী?

DNS (Domain Name System) সার্ভার হলো এমন একটি সিস্টেম যা ওয়েবসাইটের ডোমেন নেমকে আইপি এড্রেসে পরিবর্তন করে। আপনি যখন কোনও ওয়েবসাইটে যান, তখন DNS সার্ভার দ্রুততার সাথে আপনাকে সেই সাইটে নিয়ে যেতে পারে। অনেক সময় ইন্টারনেটের গতি ধীর হতে পারে অকার্যকর DNS সার্ভারের কারণে।

ফাস্ট DNS সার্ভার ব্যবহার করা

আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের গতি বৃদ্ধি করতে দ্রুতগতির DNS সার্ভার ব্যবহার করতে পারেন। কিছু জনপ্রিয় DNS সার্ভার হলো:

  • Google Public DNS: 8.8.8.8 এবং 8.8.4.4
  • Cloudflare DNS: 1.1.1.1 এবং 1.0.0.1

DNS সার্ভার পরিবর্তন করার মাধ্যমে আপনি ওয়েবসাইট লোডিং টাইম দ্রুত করতে পারবেন।

৪. ওয়াইফাই সিগন্যাল শক্তিশালী করুন

সিগন্যাল বুস্ট করার পদ্ধতি

অনেক সময় ইন্টারনেট ধীরগতিতে কাজ করে কারণ আপনার রাউটার থেকে আপনার ডিভাইসের দূরত্ব অনেক বেশি। এর ফলে ওয়াইফাই সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যায়। কয়েকটি পদক্ষেপ অনুসরণ করে আপনি সহজেই ওয়াইফাই সিগন্যালের গতি বাড়াতে পারবেন:

  • রাউটারের অবস্থান পরিবর্তন: রাউটার এমন স্থানে রাখুন যেখানে সমস্ত ডিভাইস সহজেই সিগন্যাল পেতে পারে।
  • ওয়াইফাই রিপিটার ব্যবহার: বড় বাসা বা অফিসে ওয়াইফাই রিপিটার ব্যবহার করে সিগন্যাল শক্তিশালী করতে পারেন।
  • ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার ব্যবহার: ২.৪ গিগাহার্টজ এবং ৫ গিগাহার্টজের রাউটার ব্যবহার করলে ভালো সিগন্যাল পাবেন।

রাউটারের সিকিউরিটি সেটিংস আপডেট করা

আপনার রাউটারের সিকিউরিটি সঠিকভাবে কনফিগার করা না থাকলে আপনার নেটওয়ার্কে অনধিকারপ্রাপ্ত ব্যবহারকারী প্রবেশ করতে পারে, ফলে আপনার ইন্টারনেট স্পিড ধীর হয়ে যাবে। WPA2-PSK এনক্রিপশন ব্যবহার করে আপনার নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত করুন।

৫. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ এবং ডাউনলোড ম্যানেজ করা

ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করা

অনেক সময় আপনার ডিভাইসে ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু অ্যাপ চলমান থাকে, যেগুলো ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এর ফলে আপনার ব্রাউজিং স্পিড কমে যেতে পারে। ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করে আপনি ইন্টারনেট স্পিড বাড়াতে পারেন।

  • টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার: Windows বা Mac এর টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ করে দিন।
  • মোবাইল ডিভাইস: মোবাইলে ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা ব্যবহারের অ্যাপ গুলো বন্ধ করুন।

ডাউনলোড প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা

যদি আপনার ডিভাইস কোন ফাইল ডাউনলোড করায় ব্যস্ত থাকে, তবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং ধীরগতিতে হতে পারে। তাই ডাউনলোড গুলো সময় অনুযায়ী সেট করুন এবং ব্রাউজিংয়ের সময় অপ্রয়োজনীয় ডাউনলোড বন্ধ রাখুন।

৬. ভারী ওয়েবসাইট ও ভিডিওর জন্য লোয়ার রেজোলিউশন ব্যবহার

ভিডিওর রেজোলিউশন কমানো

অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে উচ্চ রেজোলিউশনে ভিডিও দেখার ফলে ইন্টারনেট ধীর হতে পারে। ইউটিউব বা অন্যান্য ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ভিডিওর রেজোলিউশন কমিয়ে দিলে আপনি দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

  • ৭২০p বা ৪৮০p ভিডিও স্ট্রিমিং: উচ্চ রেজোলিউশনের পরিবর্তে ৭২০p বা ৪৮০p ব্যবহার করলে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জন্য কম ডাটা ব্যবহার হয়।
  • অডিও ভার্সন ব্যবহার: ভিডিওর বদলে শুধুমাত্র অডিও ভার্সন শুনলে অনেক কম ডাটা খরচ হবে এবং ইন্টারনেট স্পিডও বাড়বে।

ব্লক কনটেন্ট লোড করা বন্ধ করুন

অনেক ওয়েবসাইটে ভারী ইমেজ, বিজ্ঞাপন বা ভিডিও থাকে, যা লোড হতে অনেক সময় নেয়। তাই, ব্রাউজারের মধ্যে এডব্লকার এক্সটেনশন ইনস্টল করুন। এটি বিজ্ঞাপন ব্লক করবে এবং পেজ দ্রুত লোড হবে।


ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো এখন আর খুব কঠিন কিছু নয়। আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন এবং কয়েকটি সহজ কৌশল ব্যবহার করেন, তবে আপনি সহজেই দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবেন। রাউটারের অবস্থান পরিবর্তন থেকে শুরু করে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ করা, প্রতিটি ধাপই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতগতির ইন্টারনেট শুধু আপনার কাজের গতি বাড়াবে না, বরং সময়ও বাঁচাবে।

আশা করি এই গাইডটি আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের গতি বাড়াতে সহায়ক হবে। যদি আপনার আরও কিছু প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন। আর এই নিবন্ধটি যদি আপনার কাজে লাগে, তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না!

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *