Home » » গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করতে হয় কিভাবে?

গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করতে হয় কিভাবে?

গুগল শীট (Google Sheets) হল একটি জনপ্রিয় এবং ব্যবহারিক টুল যা ডেটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং ভিজ্যুয়ালাইজেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়। গুগল শীটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল চার্ট এবং গ্রাফ তৈরি করার ক্ষমতা। চার্ট ও গ্রাফ ডেটার ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশনে সাহায্য করে, যা জটিল তথ্যগুলোকে সহজে বোঝা যায়।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা ধাপে ধাপে দেখাব কিভাবে গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করতে হয়। আমরা বিভিন্ন ধরণের চার্ট ও গ্রাফ যেমন বার চার্ট, পাই চার্ট, লাইন গ্রাফ ইত্যাদি তৈরি করার প্রক্রিয়াটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। এছাড়াও, কীভাবে সেগুলিকে কাস্টমাইজ করা যায়, তা নিয়ে কথা বলব।


গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করার গুরুত্ব

ডেটা বিশ্লেষণে চার্ট এবং গ্রাফের গুরুত্ব অপরিসীম। গুগল শীটে চার্ট বা গ্রাফ ব্যবহার করে আপনি সহজে আপনার ডেটার প্রবণতা (trend), তুলনা (comparison), এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।

  • তথ্যের সহজ উপস্থাপন: চার্ট ও গ্রাফ ডেটার জটিলতা কমিয়ে সেটিকে দর্শকদের বোঝার মতো সহজ করে তোলে।
  • ডেটার বিশ্লেষণ: আপনি যখন বিভিন্ন ডেটা একসঙ্গে বিশ্লেষণ করতে চান, তখন গ্রাফ বা চার্ট একটি কার্যকরী টুল।
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহজতা: গুগল শীটের চার্ট বা গ্রাফগুলি আপনাকে দ্রুত এবং সহজে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করতে পারে।

গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করতে হয় কিভাবে?

১. ডেটা নির্বাচন করা

প্রথম ধাপটি হলো সঠিক ডেটা নির্বাচন করা। আপনার ডেটাটি সঠিকভাবে চার্টে উপস্থাপন করার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • গুগল শীটে চার্ট তৈরি করতে প্রথমে আপনাকে ডেটা সেলগুলি নির্বাচন করতে হবে।
  • এটি একটি টেবিলের আকারে হতে পারে যেখানে কলাম এবং সারিগুলি ডেটার বিভিন্ন পয়েন্ট নির্দেশ করে।

ডেটা নির্বাচন করার উদাহরণ

ধরা যাক, আপনি মাস ভিত্তিক বিক্রয় ডেটা দেখাতে চান। প্রথম কলামে মাসের নাম এবং দ্বিতীয় কলামে বিক্রয়ের পরিমাণ থাকতে হবে:

মাসবিক্রয় (টাকা)
জানুয়ারি৫০০০
ফেব্রুয়ারি৬০০০
মার্চ৪৫০০

এই টেবিলটি সঠিকভাবে নির্বাচন করুন, কারণ এটিই আপনার চার্টের ভিত্তি হবে।

২. চার্ট ইন্সার্ট করা

ডেটা নির্বাচন করার পরে, চার্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে গুগল শীটের মেনু ব্যবহার করতে হবে।

  • ডেটা নির্বাচন করার পর উপরের Insert মেনুতে ক্লিক করুন।
  • সেখানে আপনি "Chart" অপশন দেখতে পাবেন। সেটিতে ক্লিক করুন।

গুগল শীট আপনার নির্বাচিত ডেটা অনুযায়ী একটি ডিফল্ট চার্ট তৈরি করবে। তবে এটি কাস্টমাইজ করা যায় যাতে এটি আপনার চাহিদা অনুযায়ী উপস্থাপিত হয়।

৩. চার্টের ধরণ নির্বাচন

গুগল শীট স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ডিফল্ট চার্ট তৈরি করলেও, আপনি বিভিন্ন ধরনের চার্ট থেকে বেছে নিতে পারেন। সঠিক চার্ট নির্বাচন করা আপনার ডেটার ধরণ ও উপস্থাপনার ওপর নির্ভর করে।

বিভিন্ন ধরনের চার্ট

  • বার চার্ট: ডেটার বিভিন্ন ক্যাটেগরি তুলনা করার জন্য সবচেয়ে সাধারণ।
  • লাইন চার্ট: সময়ের সাথে সাথে ডেটার পরিবর্তন দেখানোর জন্য আদর্শ।
  • পাই চার্ট: বিভিন্ন অংশের মধ্যে অনুপাত বা শতাংশ দেখাতে ব্যবহার করা হয়।
  • কলাম চার্ট: বার চার্টের মতোই, তবে উলম্ব আকারে থাকে।
  • এরিয়া চার্ট: এটি লাইন চার্টের মতোই, তবে এর মধ্যে ডেটার পরিবর্তনটি রঙ দিয়ে পূর্ণ হয়।

চার্টের ধরণ কিভাবে পরিবর্তন করবেন

  • একবার চার্টটি তৈরি হলে, চার্টের উপর ক্লিক করুন।
  • এরপর ডানদিকে একটি মেনু দেখা যাবে যেখানে "Chart Type" থেকে আপনার পছন্দের চার্ট নির্বাচন করতে পারবেন।

৪. চার্ট কাস্টমাইজ করা

চার্ট তৈরি করার পর সেটি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করতে হবে। গুগল শীট আপনাকে বেশ কিছু কাস্টমাইজেশন অপশন দেয়।

চার্টের শিরোনাম পরিবর্তন করা

  • চার্টের শিরোনামে ডাবল ক্লিক করুন, এবং আপনার পছন্দমতো শিরোনাম লিখুন।
  • আপনি শিরোনামের ফন্ট, রঙ, এবং আকারও পরিবর্তন করতে পারেন।

ডেটা লেবেল যোগ করা

ডেটা লেবেল আপনার চার্টের প্রতিটি অংশে ডেটার মান দেখাতে সাহায্য করে।

  • চার্টের ডানপাশে থাকা Customize ট্যাব থেকে Series অপশনে যান।
  • "Data Labels" চেকবক্সটি টিক দিয়ে ডেটা লেবেল প্রদর্শন করুন।

অক্ষের নামকরণ

আপনার চার্টের উল্লম্ব এবং আনুভূমিক অক্ষের নাম দেওয়া উচিত যাতে দর্শকরা সহজে বুঝতে পারে ডেটাটি কী নির্দেশ করছে।

  • Customize মেনুতে যান।
  • তারপর Chart & Axis Titles থেকে Horizontal Axis Title এবং Vertical Axis Title এ প্রয়োজনীয় শিরোনাম যোগ করুন।

৫. চার্ট শেয়ার এবং ডাউনলোড করা

চার্ট তৈরি ও কাস্টমাইজ করার পর, আপনি এটি অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন বা নিজের ব্যবহারের জন্য ডাউনলোড করতে পারেন।

শেয়ার করার প্রক্রিয়া

  • আপনার শীটটি অন্যদের সাথে শেয়ার করতে চাইলে, উপরের ডানপাশে থাকা Share বোতামে ক্লিক করুন।
  • শেয়ার করার সময়, আপনি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অনুমতি দিতে পারেন এবং তাদের দেখতে বা সম্পাদনা করার অনুমতি নির্ধারণ করতে পারেন।

চার্ট ডাউনলোড করা

  • আপনি চাইলে চার্টটি ছবির আকারে ডাউনলোড করতে পারেন। এজন্য চার্টের উপরে ক্লিক করে তিনটি ডট আইকনে ক্লিক করুন এবং Download as PNG নির্বাচন করুন।

বিভিন্ন ধরনের চার্ট ব্যবহার করার সেরা উপায়

ডেটার ধরন এবং বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে, বিভিন্ন ধরনের চার্ট ও গ্রাফ ব্যবহার করা হয়। এখানে কয়েকটি সাধারণ উদাহরণ দেওয়া হল:

বার চার্টের ব্যবহার

  • বার চার্ট সাধারণত শ্রেণিবদ্ধ ডেটার তুলনা দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে পার্থক্য দেখাতে কার্যকর।

পাই চার্টের ব্যবহার

  • পাই চার্ট সাধারণত একটি সম্পূর্ণর মধ্যে বিভিন্ন অংশের অনুপাত বা শতাংশ দেখায়। এটি বিশেষভাবে উপযোগী যখন আপনি পুরো ডেটার বিভিন্ন উপাদানের ভাগ দেখতে চান।

লাইন গ্রাফের ব্যবহার

  • সময়ের সাথে সাথে প্রবণতা (trends) বিশ্লেষণ করতে লাইন গ্রাফ বেশ কার্যকর। যদি আপনি মাস বা বছর ধরে কোন কিছু পরিবর্তিত হয়েছে কিনা তা দেখতে চান, এটি একটি আদর্শ গ্রাফ।

গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরির সুবিধা

গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি কেবলমাত্র আপনার ডেটাকে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে সাহায্য করে না, বরং এটি শেয়ার করা এবং সহযোগিতার (collaboration) ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। গুগল শীটের এই সুবিধাগুলি অনেক প্রফেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন ব্যবসায়িক বিশ্লেষণ, শিক্ষাক্ষেত্রে রিসার্চ, এবং আরও অনেক কিছুতে।

  • সহজে ব্যবহারযোগ্য: গুগল শীটের ইন্টারফেস সহজ এবং ব্যবহারকারী বান্ধব।
  • সহযোগিতা: আপনি একই ফাইল বিভিন্ন মানুষের সাথে শেয়ার করে একসাথে কাজ করতে পারেন।
  • রিয়েল টাইম আপডেট: গুগল শীটে পরিবর্তন করলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সবার কাছে আপডেট হয়।


গুগল শীটে চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করা একেবারে সহজ এবং অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ডেটা বিশ্লেষণ এবং প্রদর্শনের একটি শক্তিশালী টুল যা আপনাকে ডেটা থেকে মূল্যবান তথ্য বের করতে সাহায্য করে। এই ব্লগে আমরা গুগল শীটে চার্ট তৈরি করার ধাপগুলো সহজভাবে বর্ণনা করেছি এবং কিভাবে সেগুলি কাস্টমাইজ করা যায় তা আলোচনা করেছি। আশা করি, আপনি এই প্রক্রিয়াটি ভালোভাবে আয়ত্ত করেছেন এবং নিজেই গুগল শীটে চার্ট তৈরি করতে পারবেন।

সুতরাং, দেরি না করে এখনই আপনার ডেটা নিয়ে কাজ শুরু করুন এবং গুগল শীটে চার্ট তৈরি করে দেখুন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *