Home » » কিভাবে কম্পিউটারে ভাইরাস স্ক্যান করতে হয়?

কিভাবে কম্পিউটারে ভাইরাস স্ক্যান করতে হয়?

কম্পিউটার ভাইরাসের সমস্যা আজকাল খুবই সাধারণ। ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে কম্পিউটার ভাইরাসের ঝুঁকিও বেড়েছে। ভাইরাস আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে, আপনার ডিভাইসকে ধীর করতে পারে এবং আপনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ধ্বংস করতে পারে। সুতরাং, ভাইরাস স্ক্যান করে কম্পিউটারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এই ব্লগে, আমরা জানব কিভাবে কম্পিউটারে ভাইরাস স্ক্যান করতে হয় এবং কীভাবে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে।


ভাইরাস স্ক্যান কী এবং কেন এটি জরুরি?

কম্পিউটার ভাইরাস হলো একটি ম্যালওয়্যার, যা আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং সেটির কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে। ভাইরাস সাধারণত ইমেইল, ডাউনলোড করা সফটওয়্যার, কিংবা ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের মাধ্যমে কম্পিউটারে প্রবেশ করে।

ভাইরাস স্ক্যানার একটি বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার যা আপনার কম্পিউটারে বিদ্যমান ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, ও স্পাইওয়্যার খুঁজে বের করে এবং সেগুলোকে মুছে ফেলে বা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। ভাইরাস স্ক্যানের প্রধান কারণগুলো হল:

  • ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা: ভাইরাস আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন পাসওয়ার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস চুরি করতে পারে।
  • কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা রক্ষা: ভাইরাস থাকলে আপনার কম্পিউটারের গতি কমে যায় এবং এটি ধীরগতিতে কাজ করে।
  • প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা: ভাইরাস স্ক্যান করলে আপনি জানতে পারবেন কোন কোন ফাইল বিপজ্জনক হতে পারে এবং কীভাবে সেগুলো থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

ভাইরাস স্ক্যান করার ধাপসমূহ

কম্পিউটারে ভাইরাস স্ক্যান করা খুবই সহজ। তবে সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে আপনি আরও ভালোভাবে আপনার ডিভাইসকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। নিচে ধাপে ধাপে ভাইরাস স্ক্যান করার পদ্ধতি দেয়া হলো:

১. অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করা

ভাইরাস স্ক্যান করার প্রথম ধাপ হলো ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করা। আজকাল অনেক অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার বাজারে পাওয়া যায়, যেমন:

  • Kaspersky
  • Avast
  • Norton
  • Bitdefender
  • McAfee

এই সফটওয়্যারগুলো বিনামূল্যেও পাওয়া যায়, তবে পূর্ণ সুরক্ষার জন্য পেইড ভার্সন ব্যবহার করাই ভালো। অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করার সময় আপনার কম্পিউটারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন সফটওয়্যারটি বেছে নিন।

২. অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের আপডেট করা

যে কোনো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করার পরে সেটি আপডেট করা অত্যন্ত জরুরি। ভাইরাস প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই নতুন ধরনের ভাইরাস ধরার জন্য আপনার সফটওয়্যার আপডেট থাকতে হবে। বেশিরভাগ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আপনাকে স্বয়ংক্রিয় আপডেটের সুবিধা দেয়।

৩. ফুল সিস্টেম স্ক্যান চালানো

একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল এবং আপডেট করার পরে, পুরো কম্পিউটার সিস্টেম স্ক্যান করা উচিত। ফুল সিস্টেম স্ক্যান চালানোর ধাপগুলো:

  1. অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার খুলুন।
  2. স্ক্যান অপশন থেকে "ফুল সিস্টেম স্ক্যান" বা "ডিপ স্ক্যান" নির্বাচন করুন।
  3. স্ক্যানের জন্য সময় লাগতে পারে, তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন।
  4. স্ক্যান সম্পূর্ণ হলে সফটওয়্যারটি খুঁজে পাওয়া ভাইরাসের তালিকা দেখাবে এবং আপনি চাইলে সেগুলো মুছে ফেলতে বা কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে পারবেন।

৪. সাপ্তাহিক বা মাসিক স্ক্যান নির্ধারণ করা

কম্পিউটারে নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যান করা গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারে সাপ্তাহিক বা মাসিক স্ক্যানের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচী নির্ধারণের সুবিধা আছে। এটি সেট আপ করলে আপনার কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান হবে, এবং ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া সহজ হবে।


কিভাবে ফ্রি ভাইরাস স্ক্যানার ব্যবহার করবেন?

অনেক ব্যবহারকারী পেইড অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের পরিবর্তে ফ্রি ভাইরাস স্ক্যানার ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। ফ্রি ভাইরাস স্ক্যানার ব্যবহারের সুবিধা হলো আপনি বিনামূল্যে ভাইরাস খুঁজে বের করতে পারবেন। তবে ফ্রি সফটওয়্যারের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, যেমন উন্নত সুরক্ষা না থাকা। কিছু জনপ্রিয় ফ্রি ভাইরাস স্ক্যানার হল:

  • Avira Free Antivirus
  • AVG Free Antivirus
  • Malwarebytes Free

ফ্রি স্ক্যানার ব্যবহার করার আগে মনে রাখতে হবে, সেগুলো শুধু ভাইরাস খুঁজে পাবে কিন্তু পূর্ণ সুরক্ষা দেয়ার মতো ক্ষমতা নেই। তাই উন্নত সুরক্ষার জন্য পেইড অ্যান্টিভাইরাসে আপগ্রেড করাই বুদ্ধিমানের কাজ।


কীভাবে ম্যানুয়ালি ভাইরাস স্ক্যান করবেন?

কিছু ব্যবহারকারী ম্যানুয়ালি ভাইরাস স্ক্যান করতে পছন্দ করেন, কারণ এটি আপনাকে আপনার কম্পিউটারের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়। ম্যানুয়ালি স্ক্যান করার ধাপগুলো নিম্নরূপ:

  1. আপনার কম্পিউটারের Task Manager বা Activity Monitor খুলুন।
  2. সেখান থেকে কোন কোন প্রোগ্রাম বা প্রসেস সন্দেহজনক লাগছে তা চিহ্নিত করুন।
  3. সন্দেহজনক ফাইলগুলো অনলাইনে বা অ্যান্টিভাইরাসের মাধ্যমে চেক করুন।
  4. এরপর ফাইলগুলো ডিলিট করুন বা কোয়ারেন্টাইনে রাখুন।

বিকল্প মেথড: কমান্ড প্রম্পটের মাধ্যমে ভাইরাস খোঁজা

কমান্ড প্রম্পটের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস খুঁজে বের করা সম্ভব। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. Start মেনু থেকে cmd লিখে Command Prompt চালু করুন।
  2. তারপর sfc /scannow টাইপ করুন এবং Enter চাপুন।
  3. আপনার সিস্টেম স্ক্যান শুরু হবে এবং সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে দেখাবে।

ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায়

ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকা খুবই জরুরি। ভাইরাস প্রবেশ করলে সেটা আপনার সিস্টেমকে ক্ষতি করতে পারে। তাই নিচের নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত:

  • আপডেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা: আপনার অ্যান্টিভাইরাস ও অন্যান্য সফটওয়্যার সবসময় আপডেট রাখা উচিত।
  • ইমেইল চেক করার সময় সতর্ক থাকা: অজানা প্রেরকের ইমেইল এবং তার সংযুক্তি খোলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।
  • সন্দেহজনক ওয়েবসাইট থেকে দূরে থাকা: ইন্টারনেটে ব্রাউজ করার সময় নিশ্চিত করুন যে আপনি শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন।
  • ফাইল ডাউনলোড করার আগে স্ক্যান করা: ইন্টারনেট থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করার আগে সেটি স্ক্যান করে নিন।
  • সর্বদা ব্যাকআপ রাখা: গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ও ফাইলগুলোর ব্যাকআপ রাখা উচিত, যাতে ভাইরাস আক্রমণ করলে আপনি সেই ফাইলগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারেন।

কিভাবে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নির্বাচন করবেন?

একটি ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নির্বাচন করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। বাজারে অনেক ধরনের অ্যান্টিভাইরাস পাওয়া যায়। সঠিকটি বেছে নেয়ার কিছু বিষয়:

  • পর্যালোচনা (Reviews): বিভিন্ন পর্যালোচনা সাইটে গিয়ে অ্যান্টিভাইরাসগুলোর রেটিং দেখে নিতে পারেন।
  • পৃথিবীজুড়ে ব্যবহারকারীর সংখ্যা: অধিক ব্যবহারকারী থাকা অ্যান্টিভাইরাস সাধারণত ভালো হয়।
  • উন্নত ফিচার: কোন কোন অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারে উন্নত ফিচার যেমন রিয়েল টাইম প্রোটেকশন, ফায়ারওয়াল, স্পাইওয়্যার প্রোটেকশন ইত্যাদি থাকে।
  • মূল্য: আপনি কি বিনামূল্যে ব্যবহার করতে চান, নাকি প্রিমিয়াম ফিচারের জন্য মূল্য পরিশোধ করতে আগ্রহী?


কম্পিউটারে ভাইরাস স্ক্যান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এটি আপনার ডিভাইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা হারানোর হাত থেকে রক্ষা করে এবং আপনার কম্পিউটারকে দ্রুতগতিতে রাখে। উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই ভাইরাস স্ক্যান করতে পারবেন এবং ভাইরাস থেকে আপনার কম্পিউটারকে রক্ষা করতে পারবেন।

আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে মন্তব্যে জানাতে পারেন। এই পোস্টটি যদি আপনার কাজে আসে, তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না!

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *