Home » » কিভাবে অনলাইন ব্যাকআপ করবেন?

কিভাবে অনলাইন ব্যাকআপ করবেন?

অনলাইনে তথ্য ব্যাকআপ করা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমাদের কাজের অনেক অংশ, যেমন ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট, ছবি, ভিডিও, এবং অন্যান্য মূল্যবান তথ্য, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে ডিভাইস নষ্ট হতে পারে বা তথ্য হারিয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অনলাইন ব্যাকআপ আমাদের তথ্যকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।

অনলাইন ব্যাকআপের মাধ্যমে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ইন্টারনেটে নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারেন, যাতে আপনি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে এগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারেন। চলুন জেনে নিই, কীভাবে অনলাইন ব্যাকআপ করবেন এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ।

কেন অনলাইন ব্যাকআপ গুরুত্বপূর্ণ?

প্রথমেই বোঝা জরুরি যে, অনলাইন ব্যাকআপ কেন প্রয়োজনীয়। আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যদি শুধুমাত্র এক জায়গায়, যেমন আপনার কম্পিউটার বা ফোনে সংরক্ষণ করা থাকে, তবে সেটি হারানোর ঝুঁকি অনেক বেশি। ডিভাইস হারিয়ে গেলে, ভাইরাস আক্রমণ হলে বা হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে গেলে, সেগুলো পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনলাইন ব্যাকআপ আপনাকে এই ধরনের ঝুঁকি থেকে বাঁচায়।

অনলাইন ব্যাকআপ ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো:

  • তথ্য সুরক্ষা: আপনার তথ্য ইন্টারনেট-ভিত্তিক সার্ভারে এনক্রিপ্টেড ফর্মেটে সংরক্ষিত হয়, যা অত্যন্ত নিরাপদ।
  • প্রবেশযোগ্যতা: যেকোনো সময়, যেকোনো ডিভাইস থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
  • স্বয়ংক্রিয় ব্যাকআপ: অনেক ব্যাকআপ পরিষেবা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট সময় পরপর আপনার ডেটার ব্যাকআপ নেয়।
  • দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ: আপনার ডেটা দীর্ঘ সময় ধরে অনলাইনে সুরক্ষিত থাকে, ফলে পুরোনো ফাইল পুনরুদ্ধার করাও সহজ হয়।

কিভাবে অনলাইন ব্যাকআপ করবেন?

অনলাইন ব্যাকআপ করার প্রক্রিয়া খুব সহজ, তবে সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করলে তা আরও কার্যকর হয়। এখানে ধাপে ধাপে অনলাইন ব্যাকআপ করার পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হলো:

১. সঠিক ব্যাকআপ পরিষেবা বেছে নিন

অনলাইন ব্যাকআপের জন্য সঠিক পরিষেবা বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু জনপ্রিয় ব্যাকআপ সার্ভিসের নাম উল্লেখ করা হলো:

  • Google Drive: ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ এবং বিনামূল্যে ১৫ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ দেয়।
  • Dropbox: তথ্য শেয়ারিং এবং সংরক্ষণের জন্য জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম।
  • OneDrive: মাইক্রোসফটের ক্লাউড পরিষেবা, যা ৫ জিবি পর্যন্ত ফ্রি স্টোরেজ সরবরাহ করে।
  • iCloud: অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য একটি অন্যতম জনপ্রিয় পরিষেবা।

সঠিক পরিষেবা বাছাই করার সময় আপনার প্রয়োজন অনুসারে স্টোরেজ স্পেস, নিরাপত্তা, এবং সেবার খরচ বিবেচনা করুন।

২. অ্যাকাউন্ট তৈরি বা লগইন করুন

যে ব্যাকআপ পরিষেবাটি আপনি বেছে নিয়েছেন, তাতে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। যদি আপনার আগে থেকেই কোনো অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে সেটিতে লগইন করুন।

  • Google Drive: আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে লগইন করুন।
  • Dropbox: ইমেইল বা গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
  • OneDrive: মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লগইন করুন।
  • iCloud: অ্যাপল আইডি ব্যবহার করে সাইন ইন করুন।

৩. ফাইল আপলোড করুন

ব্যাকআপের জন্য ফাইল আপলোড করা হলো মূল ধাপ। আপনি নিজের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য ফাইল আপলোড করতে পারেন। ফাইল আপলোড করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মনে রাখুন:

  • ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফাইল সংরক্ষণ করুন: বিভিন্ন ধরণের ফাইল আলাদা আলাদা ফোল্ডারে সংরক্ষণ করুন, যাতে পরবর্তীতে খুঁজে পেতে সহজ হয়।
  • ফাইল নাম সহজ রাখুন: ফাইলের নাম এমন রাখুন যাতে পরে সেগুলো চিনতে সুবিধা হয়।
  • স্বয়ংক্রিয় আপলোড সেট করুন: অনেক পরিষেবা স্বয়ংক্রিয় ব্যাকআপের সুবিধা দেয়, যা সময়মতো ব্যাকআপ নিতে সাহায্য করে।

৪. এনক্রিপশন এবং নিরাপত্তা সেট করুন

আপনার ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাকআপ ফাইলগুলো এনক্রিপ্ট করা জরুরি। অধিকাংশ ক্লাউড সার্ভিস স্বয়ংক্রিয় এনক্রিপশন প্রদান করে। তবে আপনি যদি আরো সুরক্ষিত রাখতে চান, তাহলে নিজে থেকে এনক্রিপশন টুল ব্যবহার করতে পারেন।

  • দ্বৈত প্রমাণীকরণ (Two-factor authentication): আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য দুই ধাপের যাচাইকরণের ব্যবস্থা চালু রাখুন।
  • সিকিউরিটি কি বা পাসওয়ার্ড: ব্যাকআপে অ্যাক্সেস পেতে আপনার পাসওয়ার্ড বা সিকিউরিটি কি ঠিকমতো সংরক্ষণ করুন।

৫. সময়মতো ব্যাকআপ আপডেট করুন

ব্যাকআপ নিয়মিত আপডেট করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনার ফাইলগুলো সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। অনলাইন ব্যাকআপ সার্ভিসগুলো সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকআপ আপডেট করে দেয়, তবে আপনি নিজেও ম্যানুয়ালি ফাইল আপলোড করতে পারেন।

  • স্বয়ংক্রিয় ব্যাকআপ চালু করুন: অনেক পরিষেবা নির্দিষ্ট সময় পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকআপ আপডেট করে।
  • মাসিক বা সাপ্তাহিক চেক করুন: ব্যাকআপটি সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে প্রতি মাসে বা সপ্তাহে একবার চেক করুন।

৬. ফাইল পুনরুদ্ধার করুন (Restore)

যখন আপনার কম্পিউটার বা ডিভাইস থেকে ডেটা হারিয়ে যায়, তখন অনলাইন ব্যাকআপ থেকে সেই ডেটা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। এটি অত্যন্ত সহজ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে আপনি যেকোনো জায়গা থেকে আপনার ফাইলগুলো ফেরত পেতে পারেন।

  • ব্যাকআপ সার্ভিসে লগইন করুন।
  • প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো খুঁজে বের করুন।
  • ফাইলগুলো ডাউনলোড করুন বা পুনরুদ্ধার করুন।

৭. খরচ এবং স্টোরেজ পরিকল্পনা বিবেচনা করুন

অনলাইন ব্যাকআপ সেবাগুলোর বেশিরভাগই ফ্রি স্টোরেজ দিয়ে শুরু হয়, কিন্তু প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত স্টোরেজ কিনতে হতে পারে। পরিকল্পনা করার সময় আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী স্টোরেজ স্পেস এবং তার খরচ বিবেচনা করুন।

  • ফ্রি স্টোরেজ: বেশিরভাগ সেবা ৫ থেকে ১৫ জিবি পর্যন্ত বিনামূল্যে স্টোরেজ দেয়।
  • পেইড প্ল্যান: অতিরিক্ত স্টোরেজের জন্য আপনাকে মাসিক বা বার্ষিক প্যাকেজ সাবস্ক্রাইব করতে হবে। স্টোরেজ স্পেস এবং দামের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান উপলব্ধ থাকে।

অনলাইন ব্যাকআপ ব্যবহারের সুবিধা

অনলাইন ব্যাকআপের প্রধান সুবিধাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

  • তথ্য চুরি বা হারানো থেকে সুরক্ষা: আপনার ডেটা সুরক্ষিত থাকে এবং যেকোনো ধরনের চুরির ঝুঁকি কমে যায়।
  • ডেটা অ্যাক্সেসের সহজতা: যেকোনো ডিভাইস থেকে আপনার ডেটা সহজেই অ্যাক্সেস করা সম্ভব হয়।
  • স্বয়ংক্রিয় ব্যাকআপ: ম্যানুয়ালি ফাইল আপলোড করার প্রয়োজন নেই; অনেক পরিষেবা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত সময় পরপর ব্যাকআপ নিয়ে নেয়।
  • ডেটা শেয়ারিং: অনলাইন ব্যাকআপ সিস্টেমে সহজেই অন্যদের সাথে ফাইল শেয়ার করা যায়।

অনলাইন ব্যাকআপের সীমাবদ্ধতা

যদিও অনলাইন ব্যাকআপের অনেক সুবিধা রয়েছে, তবে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে:

  • ইন্টারনেট নির্ভরতা: ব্যাকআপ বা পুনরুদ্ধারের সময় ভালো ইন্টারনেট সংযোগ থাকা প্রয়োজন।
  • স্টোরেজ সীমা: ফ্রি প্ল্যানের স্টোরেজ সীমাবদ্ধ, অতিরিক্ত স্টোরেজের জন্য আপনাকে টাকা খরচ করতে হতে পারে।
  • গোপনীয়তার ঝুঁকি: যদিও অধিকাংশ পরিষেবা এনক্রিপশন প্রদান করে, তবুও তথ্য চুরির সম্ভাবনা একেবারে বাদ দেওয়া যায় না।


অনলাইন ব্যাকআপ একটি অত্যন্ত কার্যকর এবং নিরাপদ পদ্ধতি, যা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ এবং সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। এটি শুধু ডেটা হারানো থেকে রক্ষা করে না, বরং যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে আমাদের ডেটা অ্যাক্সেসের সুযোগ দেয়। সঠিক পরিষেবা বাছাই করা, নিয়মিত ব্যাকআপ আপডেট করা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

তাহলে আর দেরি কেন? আজই একটি অনলাইন ব্যাকআপ পরিষেবা বেছে নিন এবং আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটাকে সুরক্ষিত রাখুন।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *