উল্কাপিণ্ড কাকে বলে
উল্কাপিণ্ড (Meterite): অপার্থিব, প্রাকৃতিক কঠিন বস্তু যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল অতিক্রম করে কঠিন অবস্থায় ভূ-পৃষ্ঠে পতিত অগ্রসর হতে থাকে তখন তা পড়ন্ত তারার মতো উজ্জ্বল দেখায় এবং উল্কার সকল বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। তবে সব উল্কাই শেষ পর্যন্ত ভূ-পৃষ্ঠে পৌছতে পারে না, বায়ুমণ্ডল খুবই দূলর্ভ, যদিও উল্কাপাত খুবই সাধারণ ঘটনা।
উল্কাপিণ্ড মূলত ধাতু ও সিলিকেট বস্তু দ্বারা গঠিত। লোহা ও সিলিকেটের উপস্থিতির তারতম্য অনুসারে উল্কাপিণ্ডকে লোহাজাত, পাথুরে লোহা এবং পাথর- এই তিনভাগে ভাগ করা যায়। অতিক্ষুদ্র উল্কাপিণ্ডগুলোকে বাদ দিলে এ পর্যন্ত মাত্র ২৫০০ উল্কাপিণ্ডের সন্ধান পাওয়া গেছে।
সূর্যকে ঘিরে যেসব আন্তঃগ্রহ বস্তুপিণ্ড রয়েছে, উল্কাপিণ্ড সেগুলোরই অবশেষ। আন্তঃগ্রহ বস্তুপিণ্ডগুলো শত শত কিলোমিটার ব্যাসেরও হতে পারে আবার খুব ক্ষুদ্র আকারেও হতে পারে। এই বস্তু পিণ্ডগুলোর মধ্যে হর-হামেশাই সংঘর্ষ হচ্ছে। এই ধরনের বস্তুপিণ্ডের সবচেয়ে বড় মুজদ হলো মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে, যা গ্রহাণু নামে পরিচিতি। উল্কাপিণ্ডের সঙ্গে ঘনত্ব ও রাসায়নিক উপাদানে গ্রহাণুর সাদৃশ্য পাওয়া গেছে।
ধুমকেতুও উল্কাপিণ্ডের আরো একটি সম্ভাব্য উৎস হতে পারে। ধূমকেতুর অবশেষ অনেক উল্কাপাত বিশেষ করে উল্কা ঝরনার জন্য দায়ী হলেও এখন পর্যন্ত কোনো জানা উল্কাপিণ্ডই ধূমকেতুর অবশেষ হিসাবে চিহ্নিত হয়নি।
বড় আকারের উল্কাপিণ্ডের বায়ুমণ্ডলের সংঘর্ষে অনেক তাপ উৎপন্ন হয়। এই ধরণের ঘটনার ভূ-পৃষ্ঠের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর না হলেও চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে বড় আকারের উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে ভূমিরূপের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions