Home » » উদ্যোক্তা কাকে বলে

উদ্যোক্তা কাকে বলে

উদ্যোক্তা কাকে বলে

উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপদানগুলিকে একত্রিত করে তাদেরকে একত্রিত ও সমন্বয় সাধনের কাজ যে করে তাকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা বলে। সমন্বয় সাধনের কাজকে সংগঠন বলে এবং এ কাজ যে করে তাকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা বলে। শুধুমাত্র ভূমি, শ্রম ও মূলধন কোন কিছু উৎপাদন করতে পারে না। আধুনিককালে উৎপাদন ব্যবস্থা জটিলতর ও ঝুঁকিপূর্ণ আকার ধারণ করছে। একদিকে আধুনিক প্রযুক্তি ও কলকারখানার আবিষ্কার বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থার প্রসার ঘটাচ্ছে, অন্যদিকে শ্রমিকদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, শ্রম বিভাগ সম্প্রসারিত হচ্ছে, শ্রমিক সংগঠন মালিক বা উদ্যোক্তাগণের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করছে। এসব মিলিয়ে সংগঠনের দায়িতব ও গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিল্প উৎপাদনে বিনিয়োগ, মূলধন সংগ্রহ, দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ, তত্ত্বাবধান, যন্ত্রপাতি ও জনবল নির্বাচন ও সংগ্রহ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িতব পালন করতে হয়। উৎপাদনের সকল উপাদান একত্রিতকরণ, তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধনে যে ব্যক্তি নিয়োজিত থাকে তাকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা এবং যে প্রতিষ্ঠান এসব কাজ করে তাকে সংগঠন বলা হয়। নয়া ক্লাসিকেল অর্থনীতিবিদগণ সংগঠনকে উৎপাদনের একটি আলাদা উপাদান হিসেবে গণ্য করেছেন। তাঁদের মতে সংগঠনের একটি স্বতন্ত্র ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু অনেক অর্থনীতিবিদ সংগঠনকে পৃথক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করেন না। তাঁদের মতে সংগঠক ও এক বিশেষ ধরনের শ্রম মাত্র। সংগঠকদের মধ্যে যে বিচক্ষণতা ও কর্মনৈপূণ্যতা বিদ্যমান তা কমবেশি অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে আছে, সুতরাং সংগঠক ও শ্রমিকদের মধ্যে পার্থক্য পরিমাণগত, গুণগত নয়।


সংগঠক বা উদ্যোক্তার গুরুত্ব ও কার্যাবলী

আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থায়, সংগঠনের গুরুত্ব ও দায়িতব অপরিসীম। উদ্যোক্তাকে বিভিন্ন প্রকার কার্যাবলী সম্পাদন করতে হয়। নিম্নে এগুলো আলোচনা করা হল:


১) উৎপাদনের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি গ্রহণ : উৎপাদনের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ উদ্যোক্তার অন্যতম প্রধান কাজ। কি ধরনের পণ্য উৎপাদিত হবে, কি পরিমাণে হবে, দ্রব্যের উৎকর্ষ কি মানে হবে, কোথায় কারখানা স্থাপিত হবে, ভূমি ও মূলধন নিয়োগে কি পরিমাণ ব্যয় হবে, যন্ত্রপাতি কেমন হবে, কোন ধরনের শ্রমিক নিয়োগ করা হবে, ব্যবস্থাপনা কেমন হবে ইত্যাদি ব্যবসায়ের নীতি নির্ধারণী বিষয়াদি সংগঠনের পরিচালক মন্ডলীর সদস্যগণ বা উদ্যোক্তা বা ব্যক্তি মালিকানায় মালিককে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। এসব কাজে পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়। যদি সংগঠনের কোন নীতি পরিবর্তন করতে হয় সে ব্যাপারেও উদ্যোক্তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।


২) উৎপাদনের বিভিন্ন উপাদানসমূহের সমন্বয় সাধন : সংগঠক বা উদ্যোক্তাকে উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ সংগ্রহ ও সমন্বয় সাধন করতে হয়। উৎপাদনের জন্য জমি সংগ্রহ করা, কারখানার জন্য গৃহ নির্মাণ করা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল সংগ্রহ করা, উৎপাদিত পণ্যের বাজার খুঁজে বের করা, চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা উদ্যোক্তাকেই সম্পন্ন করতে হয়। উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনানুযায়ী শ্রমিক সংগ্রহ করে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ ভাগ করে দিতে হয় এবং ব্যবস্থাপক নিয়োগ করতে হয়।


৩) উৎপাদন কাজের তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ : সংগঠক কেবলমাত্র উৎপাদনের উপাদানগুলি কাজে লাগিয়েই ক্ষান্ত থাকতে পারে না, তাকে উৎপাদন চলাকালে সঠিকভাবে বিভিন্ন উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা, শ্রমিকগণ ঠিকমত কাজ করছে কিনা তার তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করতে হয়, যাতে কোন ফাঁকি দেবার সুযোগ না পায় এবং সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হয়।


৪) ঝুঁকি বহন : উদ্যোক্তা বা সংগঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ব্যবসায়ের ঝুঁকি বহন করা। বাজারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে পণ্যের ধরন ও পরিমাণ নির্ধারণ করতে হয়। যে কোন পণ্য উৎপাদনের জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়। যদি এই সময়ের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে তবে লোকসান হতে পারে বা লাভ হতে পারে। চাহিদা বেড়ে গেলে, পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে এবং সংগঠকের মুনাফার পরিমাণ বেড়ে যাবে। কিন্তু যদি পণ্যের চাহিদা হ্রাস পায় তাহলে এর মূল্য কমে যাবে এবং ফলে লোকসান হতে পারে। ব্যবসায়ের এই লাভ ক্ষতি সংগঠককেই বহন করতে হয়। এজন্য তাকে সকল সময় বাজারের অবস্থা সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। বর্তমানে উৎপাদন ব্যবস্থা জটিলতর। তাছাড়া মানুষের অভ্যাস, রুচি, বাজারের অবস্থা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। এ কারণে উৎপাদন ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে এবং উদ্যোক্তাকেই এটা বহন করতে হয়।


৫) অন্যান্য উৎপাদনের পারিশ্রমিক প্রদান : উৎপাদনে নিয়োজিত সকল উপাদানগুলির পারিশ্রমিক প্রদান করা উদ্যোক্তার কাজ। ভূমি, শ্রম ও মূলধনের সহযোগিতায় যে একটি পণ্য উৎপাদিত হয় তা বিক্রি করে সংগঠকের আয় হয়। এই আয় থেকে ভূমির জন্য খাজনা, শ্রমিকের জন্য মজুরী ও মূলধনের জন্য সুদ প্রদান করার পর যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তাই সংগঠকের আয়। ফলে এখানে লাভের ও লোকসানের উভয়েরই আশঙ্কা থাকে।


৬) নতুনতব প্রবর্তন : অর্থনীতিবিদ জে. বি. ক্লার্কের মতে উদ্যোক্তার প্রধান কাজ হ‘ল নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন এবং এর প্রবর্তন করা। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে উদ্যোক্তা নতুন নতুন যন্ত্র, উন্নত কলাকৌশল, নতুন নিয়মকানুন বা পদ্ধতি প্রবর্তন করতে সচেষ্ট থাকে। ফলে কখনো কখনো ব্যয় হ্রাস পায় এবং মুনাফার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এভাবে উদ্যোক্তা নতুন কলাকৌশলের প্রবর্তন করে উৎপাদন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনয়ন করে।


সুতরাং আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থায় উদ্যোক্তার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য যৌথ মূলধনী কারবার গড়ে উঠার ফলে উদ্যোক্তার কার্যাবলীতে কিছু পরিবর্তন এসেছে। যৌথ মূলধনী কারবারের প্রকৃত মালিক হ’ল শেয়ার হোল্ডারগণ। তাদের পক্ষ থেকে ম্যানেজার ব্যবসা পরিচালনা করেন, তবে তিনি ঝুঁকি গ্রহণ করেন না। তাই কোন কোন অর্থনীতিবিদের মতে সংগঠনকারীই হল আর্থিক উন্নয়নের অগ্রদূত। মার্শাল এদেরকে শিল্পের চালক (Captain of the Industry) হিসেবে অভিহিত করেছেন।


ব্যবসায় সংগঠনের বিভিন্ন রূপ

অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে পৃথিবীতে নানা প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন গড়ে উঠেছে। এগুলোকে ৫টি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়; যথা; (১) এক-মালিকানা কারবার, (২) অংশীদারী কারবার, (৩) যৌথ মূলধনী কারবার, (৪) সমবায় কারবার এবং (৫) রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারী কারবার।


(১) একক বা এক মালিকানা কারবার : যে কারবারে একজন মাত্র মালিক থাকেন, নিজেই ব্যবসায় উপকরণ সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার দায়িতব পালন করেন এবং এর লাভ-লোকসানের জন্য তিনি দায়ী থাকেন, তাকে এক মালিকানা কারবার বলা হয়। ব্যবসায়ে অতিপ্রাচীন কাল থেকে এক মালিকানা কারবার প্রচলিত আছে। তাই আদি রূপ হল একক বা এক মালিকানা কারবার। শিল্প বিপ-বের বহু আগে থেকেই এ ধরনের কারবার প্রচলিত আছে। এক মালিকানা কারবারে মালিক নিজেই মূলধন সংগ্রহ করে, ব্যবসা পরিচালনা করে, ব্যবসায়ের লাভ-লোকসানের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে বহন করে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *