ভোক্তার ভারসাম্য কাকে বলে
সমপ্রান্তিক উপযোগ বিধি (Law of Equi-Marginal Utility)
সমপ্রান্তিক উপযোগ বিধি এবং ভোক্তার ভারসাম্য নির্ধারণ প্রান্তিক উপযোগ বিশে-ষণের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। একজন ভোক্তার আয় সীমিত যা দিয়ে বিভিন্ন দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সে কিভাবে তার সীমিত আয় বিভিন্ন দ্রব্য ও সেবার মধ্যে বন্টন করবে যাতে তার প্রান্তিক উপযোগ সর্বোচ্চ হবে। এপ্রশ্নের জবাব সমপ্রান্তিক উপযোগ বিধির মাধ্যমে জানা যায়। প্রথমে আমরা ধরে নেব ভোক্তা যুক্তিশীল আচরণ করে। সমপ্রান্তিক উপযোগ বিধি অনুযায়ী ভোক্তাকে সর্বাধিক সম্ভব তৃপ্তি অর্জনের জন্য তার সীমিত আয় বিভিন্ন দ্রব্য ও সেবার মধ্যে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে অর্থের শেষ একক থেকে প্রাপ্ত উপযোগ (অর্থের প্রান্তিক উপযোগ) প্রত্যেক দ্রব্যের জন্য সমান হয়। অন্যান্য ভোক্তা তখনই ভারসাম্যে পৌঁছবে যখন বিভিন্ন দ্রব্যের উপর ব্যয়িত অর্থের প্রান্তিক উপযোগ ((MUM) পরস্পর সমান হয়। উল্লেখ্য, এ বিশে-ষণে অর্থের প্রান্তিক উপযোগ স্থির হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে।সমালোচনা
১. অনেক দ্রব্য আছে যেগুলোকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এককে বিভাজন করা যায় না। ফলে এ বিধির কার্যকারিতা সীমিত হয়ে পড়ে।২. এ বিধিটি ভোক্তার যুক্তিশীল আচরণের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ভোক্তা আবেগ, অনুকরণপ্রিয়তা, বাজার সম্পর্কে অজ্ঞতা, বিজ্ঞাপনের হটকারিতা ইত্যাদি দ্বারা প্রতারিত হয়। ফলে এ বিধির প্রয়োগ সীমিত হয়ে পড়ে।
৩. উপযোগ একটি মানসিক বিষয় তাই তা পরিমাপ যোগ্য নয়। কাজেই এ অনুমানটি সঠিক নয়।
৪. ‘অর্থের প্রান্তিক উপযোগ স্থির’ অনুমানটি সঠিক নয়। এ ক্ষেত্রেও ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি কার্যকর।
৫. এ তত্ত্বে দ্রব্যসমূহের উপযোগ পরস্পর স্বাধীন বলে বিবেচনা করা হয়েছে। এটা ঠিক নয়। বাস্তবে একটি দ্রব্যের উপযোগ অন্য দ্রব্যের ভোগের উপরও নির্ভরশীল।
৬. এ তত্ত্ব বিশে-ষণে একাধিক দ্রব্য বিবেচনা করলেও মূলতঃ তা এক দ্রব্য মডেল।
এ তত্ত্বের নানা সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও তা ভোক্তার আচরণ বিশে-ষণ তথা ভোক্তার ভারসাম্য নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুমানের শৈথল্যের মাধ্যমে চাহিদা সম্পর্কীয় তাৎপর্যপূর্ণ দিক ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions