সংস্কৃতি কি
সংস্কৃতি (Culture)
আধুনিককালের সভ্য সমাজ ব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি প্রত্যয় হল সংস্কৃতি। সংস্কৃতি সমাজবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। প্রচলিত অর্থে সংস্কৃতি বলতে যা বুঝায় সমাজবিজ্ঞানে তা একইরূপে বোঝানো হয় না। প্রচলিত অর্থে সংস্কৃতি হচ্ছে গান-বাজনা, নাটক, নৃত্য, শিল্পকলা, সাহিত্য প্রভৃতি। নৃ-বিজ্ঞানে জীবনধারণের সকল বিষয়ই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত হিসেবে আলোচনা করা হয়। তবে সমাজবিজ্ঞানে সংস্কৃতি বলতে বোঝায় মানব সৃষ্ট যাবতীয় বিষয় যা বংশ পরম্পরায় উত্তরাধিকার সূত্রে মানব সমাজে বর্তায়। সংস্কৃতির সংজ্ঞা বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে প্রদান করেছেন। যেমন:
জিসবার্ট বলেন, মানুষের জীবনে সকল বস্তু ও বস্তুগত আচরণের উপায় এবং পার্থিব ও অপার্থিব স্বার্থ ও সশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়ের জটিল সমষ্টিকে সংস্কৃতি বলে অভিহিত করা হয়।
রস বলেন, “ সংস্কৃতি হচ্ছে অর্জিত আচরণের সমষ্টিগত ধরন যা অনুকরণ কিংবা শিক্ষার মাধ্যমে হয়ে থাকে।”
সংস্কৃতির সংজ্ঞায় ই.বি টাইলর বলেন, “জ্ঞান-বিজ্ঞান, আচার-বিশ্বাস, শিল্পকলা, নীতিবোধ, আইনকানুন এবং অনুশীলন ও অভ্যাস যা কোনো এক সমাজের পরিবেশে মানুষ আয়ত্ব করে তাই সে সমাজের সংস্কৃতি।”
তাই বলা যায় যে, মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ডই সংস্কৃতি যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়ে। সংস্কৃতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। তা হলো:
(ক) সংস্কৃতি শিক্ষণের মাধ্যমে হয় (Culture is learned),
(খ) সংস্কৃতি অংশগ্রহণের মাধ্যমে হয় (Culture is shared) এবং
(গ) সংস্কৃতি স্থানান্তরিত হয় (Culture is transmissive)।
সংস্কৃতির দুটি উপাদান রয়েছে। একটি বস্তুগত সংস্কৃতি (Material Culture) এবং অন্যটি অবস্তুগত সংস্কৃতি (NonMaterial Culture)। মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনযাপনের জন্য যা কিছু ব্যবহার ও তৈরি করে তাই বস্তুগত সংস্কৃতি। ঘরবাড়ি, পােষাক পরিচ্ছদ, গাড়ি, আসবাবপত্র তৈজসপত্র প্রভৃতি হলো বস্তুগত সংস্কৃতি। অন্যদিকে মানুষের ভাবনা, কল্পনা, ধ্যানধারণা, ধর্ম, নীতিবোধ প্রভৃতি হচ্ছে তার অবস্তুগত সংস্কৃতি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions