স্থির তড়িৎ আবিষ্কার হয় কিভাবে জেনে নিন!
স্থির তড়িৎ (১৬০০ খ্রীঃ) -স্যার উইলিয়াম গিলবার্ট (১৫৪০-১৬০৩)
আকাশের বিদ্যুৎ চমকানি দেখে মানুষ এক সময় ভয় পেত। কিন্তু বিদ্যুৎ যে আছে এই কথাই মানুষ এক সময় জানত না। ৬০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দে প্রাচীন গ্রীসের মিলেটাস নামক স্থানে থ্যালেস নামক এক প্রখ্যাত দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ একদিন এক অদ্ভুত বিষয় আবিষ্কার করলেন।' | তখনকার দিনে অ্যাম্বার নামক এক তৈল স্ফটিক সুন্দর বর্ণবিন্যাস ও ঔজ্জ্বল্যের জন্য দামী পাথরের মর্যাদা পেত। এই অ্যাম্বার হল মাটি চাপা পড়ে ফসিল হয়ে যাওয়া পাইন গাছের আঠা বা রজন। থ্যালেস একদিন। একটা অ্যাম্বারের টুকরো চৰ্চকে করে তোলার জন্য রেশমী কাপড় দিয়ে খানিকটা ঘষে রাখলেন। হঠাৎ দেখলেন টুকরোটি হাল্কা জিনিস—যেমন কাগজ, পালক বা কাপড়ের টুকরোকে টানছে। তার তখন ধারণা হল হয়ত আকাশের যে বিদ্যুতের শক্তি মাটির পৃথিবীতেও থাকতে পারে।
এরপর ১৬০০ সালে ইংলণ্ডের রাণী এলিজাবেথ এর ব্যক্তিগত চিকিৎসক উইলিয়াম গিলবার্ট অ্যাম্বার এবং আরো নানা জিনিসকে ঘষে গবেষণা করতে লাগলেন। গবেষণার ফলে তিনি দেখতে পেলেন অ্যাম্বার ছাড়াও গন্ধক, কাচ, গালা প্রভৃতিকে সিল্ক, ফানেল বা পশু লোম দিয়ে ঘষলে তা হাল্কা জিনিসকে আকর্ষণ করে। অ্যাম্বারকে গ্রীক ভাষায় বলে ইলেকট্রন, তাই এই আকর্ষণী শক্তির নাম তিনি দিলেন ইলেকট্রিসিটি বা তড়িৎ। এই আকর্ষণ করার কারণ হিসেবে তিনি বললেন যে রেশমী কাপড় দিয়ে অ্যাম্বার, গন্ধক, কাঠ বা গালাকে ঘষলে দুটি বস্তুর ঘর্ষণে ঘর্ষ বিদ্যুৎ তৈরী হওয়ায় অ্যাম্বার, গন্ধক, কাচ বা গালা তড়িতাহত হয় তাই হাল্কা জিনিষকে আকর্ষণ করে। এই তড়িৎ ঘর্ষিত বস্তুতেই আবদ্ধ থাকে, চলাচল করতে পারে না বলে গিলবার্ট এর নাম দিলেন স্থির তড়িৎ।
ষোড়শ শতাব্দীতে গিলবার্টের কাজের অনুপ্রেরনায় ইউরোপের বিজ্ঞানীরা বিদাং তৈরী করার যন্ত্র লিডেনজার ও বিদ্যুৎ ধরে রাখবার আধার উইমসহাস্ট মেশিন আবিষ্কার করেন। বেশী পরিমাণে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করলে বিদ্যুৎ শূন্যস্থান। পেরিয়ে গিয়ে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করত। বিদ্যুৎ আধারে বিদ্যুৎ সঞ্চিত হলেও তার নিয়ন্ত্রিত প্রবাহ সম্ভব ছিল না।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment below if you have any questions