Home » » ধর্ম কি

ধর্ম কি

ধর্ম কি

সামাজিক ব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ধর্ম। বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের প্রাথমিক স্তরেই মানুষ ধর্মের উপর । বিশ্বাস স্থাপন করে। সভ্যতার বিকাশ কিংবা সামাজিক নিয়ন্ত্রণে ধর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতির এক মূল্যবান উপাদান হিসেবে ধর্ম হাজার বছর টিকে আছে। বস্তুত মানুষের বিশ্বাস, আস্থা ও নির্ভরশীলতার এক চিরন্তন প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ধর্ম। সে কারণেই সমাজতাত্ত্বিক আলোচনায় ধর্ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় হিসেবে বিবেচিত। 

ধর্মের সংজ্ঞা (Definition of religion) 

ধর্মের ইংরেজি প্রতিশব্দ Religion এসেছে Religere শব্দমূল থেকে যার অর্থ বন্ধন বা সংহতি। অন্যদিকে ধর্মের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, ধর্ম হচ্ছে এমন একটি প্রত্যয় যা কোনো বিশেষ সত্তায় বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে কিছু মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে রাখে। E.B Tylor তাঁর Primitive Culture গ্রন্থে বলেছেন, ধর্ম হচ্ছে অতিপ্রাকৃত কোনো সত্তায় বিশ্বাস স্থাপন করা (Relgion is belief on super natural being). 

The Elementary Forms of Religious Life গ্রন্থে Emile Durkheim বলেছেন, ধর্ম হচ্ছে পবিত্র বস্তুর প্রতি বিশ্বাস ও আনুষ্ঠানিকতার সমন্বিত ব্যবস্থা। উল্লিখিত পবিত্র বস্তু ধরা-ছোঁয়ার বাইরে এবং নিষিদ্ধ হিসেবেও বিবেচিত। বিশ্বাস ধর্মীয় আচরণ একটি নীতি সম্প্রদায়ের চার্চের ন্যায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত যা তাদেরকে সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ করে। (Religion is a unified system of beliefs and practice relative to sacred things that is things set a part and forbidden. Beliefs and practices a church all those who adhere to them.) 

উর্পযুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, ধর্মের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ক) অতিপ্রাকৃত শক্তির উপর বিশ্বাস (Belief), খ) বিশ্বাসের ভিত্তিতে কিছু কাজ বা আচরণ (Practice) এবং গ) কিছু আনুষ্ঠানিকতা (Ritual)। অর্থাৎ মানুষ প্রথমে বিশেষ কোনো শক্তির উপর বিশ্বাস স্থাপন করে। এ শক্তির সন্তুষ্টির জন্য পূজা, প্রার্থনা, বলিদান, উপবাস, পুণ্যস্থান দর্শন ইত্যাদি চর্চা করে। বিশ্বাস ও কাজের সমন্বয়ে তৈরি হয় কিছু আনুষ্ঠানিকতা। যেমন প্রার্থনার জন্য পবিত্রতা অর্জন, পোশাক-পরিচ্ছদের শালিনতা, নিয়ম-কানুন মেনে চলা ইত্যাদি। সুতরাং ধর্ম হচ্ছে একটি চেতনাবোধ যা অতিমানবীয় কোনো শক্তির উপর বিশ্বাসের ভিত্তিতে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড, আচারঅনুষ্ঠান সম্পাদিত হয়। ধর্মীয় চেতনাবোধ একই ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে গভীর ঐক্য তৈরি করে।


সমাজজীবনে ধর্মের ভূমিকা (Role of religion in society) 

সমাজজীবনে ধর্মের ভূমিকা অপরিসীম। মনীষীদের মতে সমাজের গর্ভ থেকে যেমন ধর্মের উদ্ভব হয়েছে, তেমনি সমাজ বিকাশে ধর্মের প্রভাব অনেকখানি। নিচে সমাজজীবনে ধর্মের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো: 

০১) সামাজিক সংহতি সৃষ্টি করে: সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একই ধর্মের অনুসারীরা নিজেদের মধ্যে সংহতি বোধ করে। অভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, রীতিনীতি ধর্মবিশ্বাসীদের মধ্যে সংহতি সৃষ্টি করে। 

০২) সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করে: ধর্মে ঐক্য বা সংহতি শক্তির (Unified force) পাশাপাশি বিভাজন শক্তিও (Divisive force) বিদ্যমান। বিভাজন শক্তির ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে পারে। এক ধর্মের অনুসারীদের সাথে অন্য ধর্মের অনুসারীদের দ্বন্দ্ব-সংঘাত, দাঙ্গা-কলহ লেগে যেতে পারে। 

০৩) সামাজিক নিয়ন্ত্রণ: সামাজিক নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ বাহন হচ্ছে ধর্ম। ধর্ম দু’ভাবে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ করে। প্রথমত ধর্মীয় শিক্ষা তথা সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান করে। দ্বিতীয়ত ধর্ম পরকালে শাস্তির ভয় দেখায়। মৃত্যুর পর দোজখে শাস্তির ভয় এবং বেহেস্তে অপার সুখ-শান্তি মানুষকে সৎ পথে জীবন-যাপনে উৎসাহিত করে। 

০৪) অর্থনৈতিক ব্যবস্থা: ধর্ম আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে। Max Weber এর মতে, প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মের উদারনীতি ইউরোপে পুঁজিবাদ বিকাশে ভূমিকা রখেছে। আবার সনাতন এবং ইসলাম ধর্ম ক্ষণস্থায়ী। পার্থিব জীবনকে তুচ্ছ বলে ধারণা দেয়। ফলে এখানে অর্থনৈতিক উন্নতি ও পুঁজিবাদের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়নি। 

০৫) বিবাহ এবং যৌন সম্পর্ক: বিবাহ এবং যৌন সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণে ধর্মের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। বিবাহের নানা রীতিনীতি, পাত্র-পাত্রী নির্বাচন, আনুষ্ঠানিকতা, স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যা ইত্যাদি ধর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আদি হতে আজ পর্যন্ত প্রতিটি সমাজে যৌন সম্পর্কের উপর ধর্মের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অজাচার’ প্রথা মােতাবেক কার কার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না তা ধর্ম দ্বারাই নির্ধারিত। 

০৬) পরিবার ও দৈনন্দিন জীবন: অনেকে বলেন, ধর্ম হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। পরিবার এবং দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সবকিছু ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত, নির্দেশিত। ধর্মভীরু মানুষ তাদের জন্ম, মৃত্যু, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, আনন্দ-উৎসব সবকিছু ধর্মীয় নির্দেশনানুযায়ী সম্পন্ন করতে চেষ্টা করে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comment below if you have any questions

অফিস/বেসিক কম্পিউটার কোর্স

এম.এস. ওয়ার্ড
এম.এস. এক্সেল
এম.এস. পাওয়ার পয়েন্ট
বাংলা টাইপিং, ইংরেজি টাইপিং
ই-মেইল ও ইন্টারনেট

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ৪দিন)
রবি+সোম+মঙ্গল+বুধবার

কোর্স ফি: ৪,০০০/-

গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স

এডোব ফটোশপ
এডোব ইলাস্ট্রেটর

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ওয়েব ডিজাইন কোর্স

এইচটিএমএল ৫
সিএসএস ৩

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৮,৫০০/-

ভিডিও এডিটিং কোর্স

এডোব প্রিমিয়ার প্রো

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৯,৫০০/-

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এসইও, গুগল এডস, ইমেইল মার্কেটিং

মেয়াদ: ৩ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ১২,৫০০/-

অ্যাডভান্সড এক্সেল

ভি-লুকআপ, এইচ-লুকআপ, অ্যাডভান্সড ফাংশনসহ অনেক কিছু...

মেয়াদ: ২ মাস (সপ্তাহে ২দিন)
শুক্র+শনিবার

কোর্স ফি: ৬,৫০০/-

ক্লাস টাইম

সকাল থেকে দুপুর

১ম ব্যাচ: সকাল ০৮:০০-০৯:৩০

২য় ব্যাচ: সকাল ০৯:৩০-১১:০০

৩য় ব্যাচ: সকাল ১১:০০-১২:৩০

৪র্থ ব্যাচ: দুপুর ১২:৩০-০২:০০

বিকাল থেকে রাত

৫ম ব্যাচ: বিকাল ০৪:০০-০৫:৩০

৬ষ্ঠ ব্যাচ: বিকাল ০৫:৩০-০৭:০০

৭ম ব্যাচ: সন্ধ্যা ০৭:০০-০৮:৩০

৮ম ব্যাচ: রাত ০৮:৩০-১০:০০

যোগাযোগ:

আলআমিন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

৭৯৬, পশ্চিম কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড,

[মেট্রোরেলের ২৮৮ নং পিলারের পশ্চিম পাশে]

কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬

মোবাইল: 01785 474 006

ইমেইল: alamincomputer1216@gmail.com

ফেসবুক: facebook.com/ac01785474006

ব্লগ: alamincomputertc.blogspot.com

Contact form

নাম

ইমেল *

বার্তা *